পিঠের মাঝখানে ব্যথা: কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিরোধের উপায়

হ্যালো বন্ধুরা! আজকের ব্লগ পোস্টে আমরা কথা বলব একটা খুবই সাধারণ সমস্যা নিয়ে  পিঠের মাঝখানে ব্যথা। অনেকেই এই ব্যথায় ভুগেন, বিশেষ করে অফিস জীবনের চাপে বা দৈনন্দিন কাজকর্মে। এটা শুধু অস্বস্তিকরই নয়, কাজকর্মেও বাধা দেয়। কিন্তু চিন্তা করবেন না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর কারণগুলো সহজেই চিহ্নিত করা যায় এবং চিকিত্সা করা যায়। আজ আমরা জানব এর প্রধান কারণগুলো, কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন এবং কীভাবে এটা প্রতিরোধ করবেন। চলুন শুরু করি!


পিঠের মাঝখানে ব্যথা কেন হয়? প্রধান কারণসমূহ


পিঠের মাঝখানের অংশ (থোরাসিক স্পাইন) আমাদের শরীরের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মেরুদণ্ডকে সমর্থন করে। এখানে ব্যথা হওয়ার কারণগুলো বিভিন্ন হতে পারে – কিছু সহজ, কিছু গুরুতর। নিচে কয়েকটা সাধারণ কারণ তুলে ধরছি:


১. খারাপ ভঙ্গি (পুর পোসচার)


দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করা বা ফোন স্ক্রল করতে করতে ঝুঁকে থাকা – এগুলো পিঠের মাংসপেশীগুলোকে চাপে ফেলে। ফলে মাঝখানের পিঠে ব্যথা শুরু হয়। এটা সবচেয়ে সাধারণ কারণ, বিশেষ করে ডেস্ক জব করা লোকদের মধ্যে।


২. মাংসপেশীর স্ট্রেন বা ছিঁড়ে যাওয়া


ভারী জিনিস তোলা, হঠাৎ ঘুরে যাওয়া বা অতিরিক্ত ব্যায়াম – এসবের কারণে পিঠের মাংসপেশী বা লিগামেন্ট ছিঁড়ে যেতে পারে। এতে তীব্র ব্যথা হয়, যা কয়েকদিন থেকে সপ্তাহ ধরে চলতে পারে।


৩. হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা ডিস্কের সমস্যা


মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলো যদি ফুলে যায় বা ছিঁড়ে যায়, তাহলে নার্ভ চাপে পড়ে এবং মাঝখানের পিঠে ব্যথা হয়। এটা প্রায়ই বয়সের সাথে সাথে হয়, কিন্তু আঘাতের কারণেও হতে পারে।


৪. আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টের সমস্যা


অস্টিওআর্থ্রাইটিসের মতো রোগ পিঠের জয়েন্টগুলোকে প্রভাবিত করে, ফলে স্থায়ী ব্যথা হয়। এটা বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।


৫. স্কলিওসিস বা মেরুদণ্ডের বাঁকা হয়ে যাওয়া


মেরুদণ্ডের অস্বাভাবিক বাঁকা হয়ে যাওয়া (স্কলিওসিস) পিঠের মাঝখানে চাপ সৃষ্টি করে এবং ব্যথা ঘটায়। এটা প্রায়ই কিশোর বয়সে শুরু হয়।


৬. অতিরিক্ত ওজন বা অসক্রিয় জীবনযাপন


ওজন বেশি হলে পিঠের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। একইভাবে, নিয়মিত ব্যায়াম না করলে পিঠের মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যায় এবং ব্যথা হয়।


৭. অন্যান্য কারণ: আঘাত, কিডনি সমস্যা বা গুরুতর রোগ


পড়ে যাওয়া বা দুর্ঘটনার কারণে আঘাত হলে তাৎক্ষণিক ব্যথা হয়। ডানদিকের মাঝখানে ব্যথা হলে কিডনির সমস্যা (যেমন স্টোন) বা খুব কম ক্ষেত্রে প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগও কারণ হতে পারে।


কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?


বেশিরভাগ ব্যথা বাড়িতেই সারে, কিন্তু যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে ডাক্তার দেখান:



  • ব্যথা ২-৩ সপ্তাহের বেশি চলে।

  • ব্যথা সাথে সাথে বুকে ছড়িয়ে পড়ে বা শ্বাসকষ্ট হয়।

  • জ্বর, ওজন কমে যাওয়া বা পায়ে অসাড়তা।

  • ব্যথা খুব তীব্র এবং অ্যাকটিভিটির সাথে বাড়ে।


প্রতিরোধের উপায়: সহজ টিপস



  • সঠিক ভঙ্গি রাখুন: চেয়ারে বসার সময় পিঠ সোজা রাখুন, স্ক্রিন আই লেভেলে রাখুন।

  • নিয়মিত ব্যায়াম: যোগা, সুইমিং বা পিঠ শক্তিশালী করার এক্সারসাইজ করুন।

  • ওজন নিয়ন্ত্রণ: স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমান।

  • ভারী জিনিস তোলার সঠিক উপায়: হাঁটু ভাঁজ করে তুলুন, পিঠ না বাঁকিয়ে।

  • ঘুমানোর অবস্থান: পিঠের নিচে হালকা কুস্তি দিয়ে শুন।


উপসংহার


পিঠের মাঝখানে ব্যথা অনেকটা এড়ানো যায় সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে। যদি আপনারও এমন সমস্যা হয়, তাহলে প্রথমে বিশ্রাম নিন এবং হট/কোল্ড কম্প্রেস চেষ্টা করুন। কিন্তু সন্দেহ হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আপনাদের অভিজ্ঞতা কমেন্টে শেয়ার করুন – এটা কীভাবে সারালেন? পরের পোস্টে দেখা হবে স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে। থাকুন সুস্থ!

check here

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *